Tuesday, March 4, 2014

চলো পালিয়ে যাই

ধূলিসাৎ জীবনের লিপিরেখা এঁকে চলে কবি,
বালি-কাঁকরে কেটে কেটে দাগ সে আঁকে ছবি।
লোকে বলে "পাগল, নিষ্কর্মা, উজবুক, ছোটলোক"।
কেউ কেউ অবজ্ঞাভরে দিয়ে যায় ছুঁড়ে চাহনি এক ঝলক।
অনেকে ঢিল মারে, কেউ দেয় থুতু, মাছি এসে উড়ে বসে জুড়ে।
পাড়ার ছেলের দল স্কুল-ফেরতা মুখ ভ্যাংচায় নাকিসুরে।
দিনের আলো পড়ে এলে আসে গার্ড, "এই, কৌন হ্যায়"!
দেখে সে টর্চের আলোয় পাগল অঘোর ঘুমায়।
লাথি মারতে মারতে তাকে নিয়ে চলে যায় অন্য চুলোয়,
যেখানে সে থাকবে আরো নিশ্চিন্তে, আরো নির্বিকার ধুলোয়।
অনেক দিন কেটে গেছে, কারোর নেই কোনো ক্ষোভ,
মলিন বিস্মৃত বিশীর্ণ জীবনের হারিয়েছে শেষ অভিযোগ,
লোকে চেয়ে চেয়ে দেখে হাসে কাঁদে গায় লাফায় এক পাগল,
সারা গায়ে জড়ানো রয়েছে তার ভারী ভারী লোহার শেকল।

(Acknowledgement:  Opening sequence of the movie "Grave of the Fireflies" by Isao Takahata)

যখন একদিন

কিছু কিছু ভালোবাসা না বলা থেকে যায়,
সন্ধ্যাকাশের রাঙা ধুলোর অধরা কুয়াশায়।
কিছু কিছু চেনাশোনা শেষ হয় অপরিচয়ে,
বেদনা শুধু থাকে জেগে অবাক বিস্ময়ে।
কাল চলে তার নিজের নিয়মে, মানে না কোন বাধা,
আশার জটিল গ্রন্থি থেকে থেকে মনে লাগায় ধাঁধা।
ফিরে ফিরে আসে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব অনাগতের বিকর্ষণে,
বুভুক্ষার নির্লজ্জ ব্যঙ্গ রূপকথা শোনায় কানে কানে।
ঝড়ে টলমল জাহাজ আছড়ে খোঁজে কূল,
উত্তাল নদীর পাড়ে যেমন এক গাছ ছিন্নমূল।
সব শেষ হয়েও পড়ে থাকে শব অসীম নগ্নতায়,
পিছন ফিরে তাকিয়ে দেখা তাই একান্ত দুরাশায়।
সবাই বলে, "এগিয়ে চলো, সামনে দেখো, চেয়ো না ফিরে",
বসন্ত-পূর্ণিমার চাঁদ মুচকে হাসে আকাশজুড়ে।

(Alternative last line: বসন্ত-পূর্ণিমার চাঁদ ছড়ায় রূপো সমুদ্রতীরে।)